728x90 AdSpace

টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস




Fotolia_47407384_Subscription_Monthly_M.


টেকনিক্যাল এনালাইসিস হল বিগত দিনের মার্কেট চার্ট পড়ে পরবর্তী মার্কেট মুভমেন্ট কি হতে পারে তা বোঝার একটি পদ্ধতি।

মুল বিষয় হল একজন ট্রেডার পূর্বের প্রাইস মুভমেন্ট ও বর্তমানের প্রাইস মুভমেন্ট দেখে ভবিষ্যতের প্রাইস কেমন হবে সে সম্পর্কে ধারনা অর্জন করতে পারে।
টেকনিক্যাল এনালাইসিস মাধ্যমে আমরা একই প্যাটার্ন মেলানোর চেষ্টা করি যা পূর্বে ঘটেছিল। এবং যেহেতু তা পূর্বে ঘটেছিল, তাই আমরা আশা করবো এবারও হয়ত আগের মত একই জিনিস ঘটতে পারে।
কেউ যখন টেকনিক্যাল এনালাইসিস কথাটি বলে, তখন আমাদের মনে সর্বপ্রথম যে কথাটি আসে তা হল চার্ট। টেকনিক্যাল এনালাইসিসের চার্ট ব্যবহার করা হয় কারন চার্টের মাধ্যমেই হিস্টোরিকাল ডাটা সবচেয়ে সহজে উপস্থাপন করা যায়।

আপনি ট্রেন্ড এবং প্যাটার্ন বোঝার জন্য চার্টে পূর্বের ডাটাগুলো দেখতে পারেন যা কিনা আপনাকে কিছু ভাল ট্রেডের সুযোগ এনে দিতে পারে।

TechnicalAnalaysis.jpg

টেকনিক্যাল এনালাইসিস ৩ টি বিশেষ নীতির মাধ্যমে কাজ করে থাকে।

১। মার্কেট অ্যাকশনঃ
২। ট্রেন্ড এ প্রাইস মুভমেন্ট
৩। ইতিহাস পুনরাবৃত্তি


চার্টঃ

টেকনিক্যাল এনালাইসিস এর ৩ টি জনপ্রিয় চার্ট হলঃ

১। লাইন চার্ট
২। বার চার্ট
৩। ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট


তারমধ্যে ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট বেশির ভাগ ট্রেডারদের কাছে খুবই জনপ্রিয়। আমরা ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট নিয়েই আলোচনা করবো। জাপানিস রাইস ট্রেডার Homma’r কাছ থেকে ক্যান্ডেলস্টিক ধারণাটি ফরেক্স মার্কেটে আসে। যা লম্বালম্বি ভাবে উভয় দিকে একটি রেখা (Stick) সহ ব্লক এর মাধ্যমে অঙ্কিত একটা ক্যান্ডেল এর মত দেখতে তাই এর নাম করন ক্যান্ডেলস্টিক। এই চার্ট টাইপ এর মাধ্যমে নির্দিষ্ট একটি দিনের বা ভিন্ন ভিন্ন সময়ের মার্কেট প্রাইস তথা ওপেন, ক্লোজ, হাই এবং লো ইত্যাদি দেখা যায়। এই ক্যান্ডেলস্টিক চার্ট অনেক রুপের মাধ্যমে অনেক ধরণের মার্কেট মুভমেন্ট ডিরেকশন দেয়।

ট্রেন্ডঃ
ট্রেন্ড হল মার্কেটের একটি স্বাভাবিক গতিবিধি (মুভমেন্ট), একটি মার্কেট ট্রেন্ড কখনো স্ট্রেইট (সোজাসুজি) গতিতে চলে না। মার্কেট সব সময় প্রগতিশীল অর্থাৎ কখনো ঊর্ধ্বমুখী বা কখনো নিম্নমুখী এবং মাঝে মাঝে সমান্তরাল। যদি প্রত্যেক ক্রমানুযায়ী আপ মুভমেন্ট আগের নিম্নমুখী ট্রেন্ডের আরো নিচের দিকে মোড় নিতে শুরু করে তখন মার্কেট এর নিম্নক্রম প্রবনতা বলে ধরা যায়। আবার প্রত্যেক ক্রমানুযায়ী ডাউন মুভমেন্ট আগের ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডের আরো উপরের দিকে মোড় নিতে শুরু করে তখন মার্কেট এর ঊর্ধ্বমুখী প্রবণতা বলে ধরে নেওয়া হয়। এটাই আসলে মার্কেটের প্রকৃত চিত্র।

সাপোর্ট এন্ড রেসিসটেন্সঃ
আপনি যদি সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স বুঝতে পারেন তবে আপনি বুঝতে পারবেন ফরেক্স মার্কেট কিভাবে কাজ করে। এই পদ্ধতি আপনাকে সঠিক সময়ে ট্রেড খুলতে এবং ঠিক সময়ে ট্রেড থেকে আপনাকে বের হয়ে আসতে আপনাকে সাহায্য করবে। বিভিন্নভাবে সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স লেভেল বের করা যায়।
যখন মার্কেট সাপোর্ট লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, সাধারণত প্রাইস আরও কমে যায় এবং পরবর্তী রেসিসটেন্স লেভেল তখন সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে। আবার যখন মার্কেট রেসিসটেন্স লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, সাধারণত প্রাইস আরও বেড়ে যায় এবং পরবর্তী সাপোর্ট লেভেল তখন রেসিসটেন্স হিসেবে কাজ করে।
তাই সাপোর্ট ব্রেক করলে সেল করা উচিত এবং রেসিসটেন্স ব্রেক করলে বাই করা উচিত।
1.png
উপরের ছবিটি দেখুন। এখানে একটি জিগজ্যাগ প্যাটার্ন দেখা যাচ্ছে। ধরুন মার্কেট আপট্রেন্ডে রয়েছে। এখানে মার্কেট সর্বোচ্চ বাড়ার পর যে প্রাইসে আবার তা কমে যেতে শুরু করে সেটাই রেসিসটেন্স। অর্থাৎ, বেড়ে যাওয়ার পর সর্বোচ্চ পয়েন্টটিই হল রেসিসটেন্স লেভেল। আবার কমে সর্বনিম্ন যত নিচে যায়, সেই পয়েন্টটি হল সাপোর্ট লেভেল। মার্কেট ডাউনট্রেন্ডে থাকলেও একইরকম।

সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স নির্ধারণঃ
একটি বিষয় মনে রাখবেন যে সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স কখনও কোন নির্দিষ্ট সংখ্যা নয়। এটি এক ধরনের লেভেল বা এরিয়া।
অনেক সময় চার্ট দেখে মনে হয় যে মার্কেট সাপোর্ট বা রেসিসটেন্স ব্রেক করেছে কিন্তু কিছুক্ষণ পর বোঝা যায় যে মার্কেট আসলে সাপোর্ট বা রেসিসটেন্স ব্রেক হয়নি, মার্কেট শুধুমাত্র টেস্ট করেছে।
ক্যান্ডেলস্টিক চার্টে এই মার্কেট টেস্টসমূহকে এভাবে দেখান যেতে পারেঃ

2.png
চার্টটি দেখুন। দেখা যাচ্ছে মার্কেট ২ বার ১.৪৭০০ সাপোর্ট লেভেল ব্রেক করেছে।
কিন্তু মার্কেট সাথে সাথেই আবার ওপরে উঠে গেছে অর্থাৎ সাপোর্ট লেভেল আসলে ভাঙ্গেনি। মার্কেট শুধুমাত্র টেস্ট করেছে।

তাহলে কিভাবে বুঝবেন যে সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স লেভেল ব্রেক হয়েছে?
এই প্রশ্নের কোন সঠিক উত্তর নেই। তবে কেউ কেউ বলে প্রাইস যদি আগের লেভেলে ক্লোজ হয় তবেই সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স ব্রেক হয়েছে বোঝা যায়। কিন্তু এটা যে সবসময় হয় তা নয়।
নিচের চার্টটি দেখুন। প্রাইস ১.৪৭০০ এর অনেক নিচে গিয়েছে। কিন্তু পরে আবার বেড়ে গিয়েছে।

3.png
কিন্তু সাপোর্টটি আসলে ব্রেক হয়নি। এটি এখনও অপরিবর্তিত রয়েছে এবং অনেক শক্তিশালী। এখন যদি আপনি আপনার বাই ট্রেড ক্লোজ করে সেল ট্রেড দিতেন, হয়ত আপনি লসের সম্মুক্ষীণ হতেন।
আপনি যদি প্রতিনিয়ত প্র্যাকটিস করেন তবে আপনি সহজেই সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স নির্ধারণ করতে পারবেন।

4.png
সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স সম্পর্কে কিছু তথ্যঃ
যখন মার্কেট রেসিসটেন্স লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, পরবর্তী সাপোর্ট লেভেল তখন রেসিসটেন্স হিসেবে কাজ করে। আবার যখন মার্কেট সাপোর্ট লেভেল একবার ব্রেক করে যায়, পরবর্তী রেসিসটেন্স লেভেল তখন সাপোর্ট হিসেবে কাজ করে, মার্কেট সাপোর্ট এবং রেসিসটেন্স লেভেল যত বেশি টেস্ট করে, ঐ সাপোর্ট বা রেসিসটেন্স তত বেশি শক্তিশালী হয়।

রেঞ্জবাউন্ড ট্রেডিং
যখন একটি নির্দিষ্ট বাউন্ডারি বা এরিয়ার ভেতর মার্কেট মভমেন্ট তথা ট্রেডিং পরিচালিত হয় তাকে রেঞ্জবাউন্ড টেডিং বলে। মূলত ৮০% সময়ে এ সিস্টেমে মার্কেট পরিচালিত হতে দেখা যায়। কারন সবসময় মার্কেট ভলাটিলিটি হাই থাকে না। রেঞ্জবাউন্ড ট্রেডিং অনেক ট্রেডারদের কাছে খুব্ই জনপ্রিয় একটি মেথড। এই পদ্ধতিতে ট্রেডারকে অবশ্যই ট্রেডিং রেঞ্জ এরিয়া অর্থাৎ দুটি এক্সট্রিম ট্রেডিং লেভেল(সাপোর্ট অ্যান্ড রেসিসটেনস) বুঝতে হবে।

Screenshot_3.png


উপরের চিত্রটি খেয়াল করুন মার্কেট একটি নির্দিষ্ট এরিয়া অর্থাৎ একটি স্ট্রং সাপোর্ট অ্যান্ড রেসিসটেনস এর মধ্যে বাউনসিং করছে। সাধারণত মার্কেট একটি হাই ভলাটিলিটি শেষে এই ধরণের রেঞ্জে মুভ করতে থাকে। অথবা মার্কেটে যদি কোন স্ট্রং প্রেসার না থাকে তখনও এই ধরণের রেঞ্জিং দেখা যায়।

মার্কেট মুভমেন্ট যখন কোন সাপোর্ট বা রেসিসটেনস লেভেল ব্রেক করতে পারে না তখন এই পদ্ধতিতে আপনি বায় অর্ডার করতে পারেন যখন প্রাইস সাপোর্ট লেভেল এর কাছাকাছি এবং সেল করতে পারেন যখন প্রাইস রেসিসটেনস লেভেল এর কাছাকাছি। সাপোর্ট লেভেল এর নিচে এবং রেসিসটেনস লেভেল এর উপরে ১৫-২০ পিপস স্টপ লস সেট করবেন এবং প্রফিট নিতে পারেন ৩০ পিপস এর মত। অভিজ্ঞতার আলোকে দেখা যায় ৩-৪টি সাপোর্ট এবং রেসিসটেনস বাউনসিং এর পরে তা ব্রেক করে তাই সতর্ক থাকবেন।

ট্রেন্ড লাইনঃ
টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের সবচেয়ে প্রচলিত এবং জনপ্রিয় একটি টুলস হল ট্রেন্ড লাইন। ট্রেন্ড লাইন সহজেই বোঝা যায়। ট্রেন্ড লাইন যদি সঠিকভাবে আকা যায় তবে তা অন্য যেকোনো মেথড থেকে ভাল ফলাফল দেয়। কিন্তু অধিকাংশ ট্রেডার সঠিকভাবে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে পারে না এবং জোর করে ট্রেন্ড লাইন আকে জার ফলে তা কার্যকর হয় না।
ট্রেন্ড লাইন আঁকার জন্য মেটা ট্রেডার এর টুলস থেকে ট্রেন্ড লাইন টুল দিয়ে লাইন টানতে হয়।
লো পয়েন্টগুলো একটি ট্রেন্ড লাইনের মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয় এবং হাই পয়েন্টগুলো একটি ট্রেন্ড লাইনের মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয়।

যদি কোন ক্যানডেল ট্রেন্ড লাইন ক্রস করে ওপরে বা নিচে চলে যায়, তখন বুঝতে হবে ট্রেন্ড লাইন ব্রেক হয়েছে।

নিচের চার্টটি ফলো করুনঃ
1.png
ট্রেন্ড ৩ রকমঃ 
 
আপট্রেন্ড (higher lows)
ডাউনট্রেন্ড (lower high)
সাইডওয়ে ট্রেন্ড (ranging)


আপট্রেন্ডে মার্কেট ঊর্ধ্বমুখী থাকে। তাই আপনি বাই করতে পারবেন। ডাউনট্রেন্ডে মার্কেট নিম্নমুখী থাকে। তাই আপনি সেল করতে পারবেন। সাইডওয়ে ট্রেন্ডে মার্কেট একটি নির্দিষ্ট রেঞ্জের মধ্যে ঘুরতে থাকে। তাই সাইডওয়ে ট্রেন্ডে ট্রেড না করাই ভাল।

ট্রেন্ড লাইন সম্পর্কে কিছু জরুরি তথ্যঃ
অন্তত ২টি টপ (top) অথবা বটম (bottom) পয়েন্ট সংযুক্ত করে ট্রেন্ড লাইন আঁকতে হয়। তবে ৩টি পয়েন্ট হলে ট্রেন্ড লাইন কনফার্ম হয়।
সাপোর্ট এবং রেসিসট্যান্স লাইনের মত যতই প্রাইস ট্রেন্ড লাইনগুলোকে টেস্ট করবে, ট্রেন্ড লাইনগুলো তত শক্তিশালী হবে।
জোর করে ট্রেন্ড লাইন আঁকার চেষ্টা করবেন না যদি। সেক্ষেত্রে তা ভ্যালিড ট্রেন্ড লাইন হবে না।


ট্রেন্ড সনাক্তকরণ,
ট্রেন্ড নিশ্চিত হওয়া এবং ট্রেন্ড ইন্টেনসিটি পরিমাপের জন্য ট্রেন্ড লাইন খুবই গুরুত্বপূর্ণ একটি টুলস। মেটেট্রেডারের টেন্ডলাইন টুল দিয়ে ট্রেন্ডলাইন আঁকতে হয়। সঠিক ট্রেন্ডলাইন ড্র’র মাধ্যমে সঠিক এবং নিখুঁত ট্রেড করতে পারা যায়। ফরেক্স মার্কেটের যেকোন চার্টে আপনি ৩ ধরণের ট্রেন্ড লাইন পাবেন এবং আঁকতে পারবেন।

১। আপট্রেন্ড (বুলিশ) লাইন আঁকার নিয়মঃ

1.png
ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডের দুই বা তার অধিক লো পয়েন্ট গুলোকে একটি লাইন এর মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয়। উপরের চিত্রে লক্ষ্য করুন এক দিনের চার্টে ঊর্ধ্বমুখী ট্রেন্ডে অনেকগুলো Higher Lows কে একটি লাইন এর মাধ্যমে কানেক্ট করা হয়েছে।

২। ডাউনট্রেন্ড (বেয়ারিশ) লাইন আঁকার নিয়মঃ
নিম্নমুখী ট্রেন্ডের দুই বা তার অধিক হাই পয়েন্ট গুলোকে একটি লাইন এর মাধ্যমে কানেক্ট করতে হয়। নিচের চিত্রে লক্ষ্য করুন এক দিনের চার্টে নিম্নমুখী ট্রেন্ডে সবগুলো Lower Highs কে একটি লাইন এর মাধ্যমে কানেক্ট করা হয়েছে।
2.png

৩। সাইডওয়ে ট্রেন্ড (সমান্তরাল)
হল মার্কেটের তেমন কোন মুভমেন্ট ছাড়া সমান্তরাল একটি গতি। ছোট ছোট ঢেউ এর মত একটি গড় সমান্তরাল মিনি ট্রেন্ড। অনেক ট্রেডাররা সাইডওয়ে ট্রেন্ড এর জন্য অপেক্ষা করে মার্কেটে প্রবেশ করার জন্য, কারন সাইডওয়ে ট্রেন্ড হচ্ছে পরবর্তী যে কোন লং ট্রেন্ডের টার্ন পয়েন্ট। সাইডওয়ে ট্রেন্ডে সাধারণত ট্রেডিং করে ভালো সুফল পাওয়া যায় না।
3.png

ট্রেন্ড লাইনে কিভাবে ট্রেড করবেনঃ“The trend is your friend” এই পুরতন কিন্তু অত্যন্ত জরুরী একটি কথা। অর্থাৎ ট্রেন্ড যে দিকের ফলোয়ার আপনি ও সেই দিক ফলো করবেন। ট্রেন্ড লাইন আলাদা কোন টেকনিক নয় বরং আপনি যে সব স্ট্রেটিজি জানেন সেগুলো কাযত করবেন সঠিক একটি ট্রেন্ড লাইন আঁকার মাধ্যমে। সাপোর্ট এবং রেসিসটেনস এ আপট্রেন্ড , ডাউনট্রেন্ড এবং রেঞ্জবাউন্ড সহ সকল অর্ডারকে নিশ্চিত করার জন্য ট্রেন্ডলাইন ব্যাবহার খুবই দরকারি।
ট্রেন্ড লাইন আঁকার পর যখন দেখবেন ৩-৪ টি করে টপ-বটম বাউনসিং করে ফেলেছে তখন অপেক্ষায় থাকবেন ট্রেড রিভার্সেল এর জন্য। অর্থাৎ ট্রেন্ড যখন তার ক্রমাগত গতি থেকে বের হয়ে যায় বা ক্রমাগত গতি পরিবর্তন করে আরেকটি নতুন ট্রেন্ড শুরু করে। আপট্রেন্ড লাইন ব্রেকে সেল করতে পারেন এবং ডাউন ট্রেন্ড লাইন ব্রেকে বায় করতে পারেন। তবে অর্ডার এর আগে নিশ্চিত হয়ে নিন ট্রেন্ড লাইন ব্রেক করেছে কিনা।

চ্যানেলঃ
আমরা এখানে চ্যানেল আই, বিটিভি কিংবা কার্টুন নেটওয়ার্ক চ্যানেল নিয়ে আলোচনা করব না। আমরা যদি ট্রেন্ড লাইন থিওরিকে আর এক ধাপ এগিয়ে নিয়ে যাই এবং আপট্রেন্ড বা ডাউনট্রেন্ড লাইনের সাথে একই দিকে সমান্তরাল ভাবে আরেকটি লাইন আঁকি, তবে একটি চ্যানেল তৈরি হবে।
চ্যানেল হল টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের আরেকটি টুলস যা বাই বা সেল করার জন্য ভাল প্রাইস নির্ধারণ করতে আমাদের সাহায্য করে।
4.png
ঊর্ধ্বমুখী চ্যানেল আঁকার জন্য আপট্রেন্ড লাইনের সমান্তরালে একটি লাইন আঁকতে হবে এবং তা সাম্প্রতিক বটম পয়েন্টগুলোর সাথে কানেক্ট করতে হবে। ট্রেন্ড লাইন আঁকার সময়ই এই লাইনটি আঁকতে হবে।
নিম্নমুখী চ্যানেল আঁকার জন্য ডাউনট্রেন্ড লাইনের সমান্তরালে একটি লাইন আঁকতে হবে এবং তা সাম্প্রতিক টপ পয়েন্টগুলোর সাথে কানেক্ট করতে হবে। ট্রেন্ড লাইন আঁকার সময়ই এই লাইনটি আঁকতে হবে।
যখন প্রাইস নিচের ট্রেন্ড লাইনকে হিট করবে, তখন আপনি বাই করতে পারেন। আর যদি প্রাইস ওপরের ট্রেন্ড লাইনকে হিট করে তবে আপনি সেল করতে পারেন।

চ্যানেল ৩ প্রকারঃ
ঊর্ধ্বমুখী চ্যানেল (higher highs and higher lows)
নিম্নমুখী চ্যানেল (lower highers and lower lows)
সমান্তরাল বা সাইডওয়ে চ্যানেল (ranging)


চ্যানেল সম্পর্কে কিছু জরুরি তথ্যঃ
চ্যানেল আঁকার সময়, দুটি ট্রেন্ড লাইনই সমান্তরাল হতে হবে।
চ্যানেলের নিচের অংশটি বাই জোন এবং ওপরের অংশটি সেল জোন হিসেবে বিবেচিত হয়।
ট্রেন্ড লাইন আঁকার মত চ্যানেল আঁকার সময়েও জোর করে চ্যানেল আঁকার চেষ্টা করবেন না। তাহলে তা ভুল ট্রেডের নির্দেশনা দিতে পারে।

পিভট পয়েন্টঃ
বাই-সেল সিগন্যাল নির্ধারণ করার জন্য পিভট পয়েন্ট ফরেক্সে অনেক জনপ্রিয় একটি মেথড। রিভার্সাল পয়েন্ট (যেখানে গিয়ে প্রাইস বিপরীত দিকে ফিরে আসে) চিহ্নিত করার জন্য ট্রেডাররা পিভট পয়েন্ট ব্যাপকভাবে ব্যবহার করে।
পিভট পয়েন্টে চার্টটিকে কয়েকটি সেকশনে ভাগ করা হয়। মাঝের পয়েন্টটি হল পিভট পয়েন্ট (PP)। পিভট পয়েন্টের ওপরে প্রাইস থাকলে মার্কেট বুল্লিশ (মার্কেটের গতিবিধি ঊর্ধ্বমুখী) এবং পিভট পয়েন্টের নিচে প্রাইস থাকলে মার্কেট বিয়ারিশ (মার্কেটের গতিবিধি নিম্নমুখী)। R1, R2 এবং R3 হল রেসিসট্যান্স লেভেল এবং পিভট পয়েন্টের (PP) অপরে থাকে। S1, S2 এবং S3 হল সাপোর্ট লেভেল এবং পিভট পয়েন্টের (PP) নিচে থাকে।
5.png
এখানে,
PP = Pivot point (পিভট পয়েন্ট)
S = Support (সাপোর্ট)
R = Resistance (রেসিসট্যান্স)

কিভাবে পিভট পয়েন্ট হিসাব করা হয়ঃ
পিভট পয়েন্টের ক্ষেত্রেঃ
High = গতকাল প্রাইস সর্বোচ্চ যে প্রাইসে গিয়েছে
Low = গতকাল প্রাইস সর্বনিম্ন যে প্রাইসে গিয়েছে
Close = গতকাল মার্কেট যে প্রাইসে ক্লোজ হয়েছে

ক্যালকুলেশনঃ
R3 = High + 2 x (PP – Low)

R2 = PP + (High – Low) = PP + (R1 – S1)

R1 = (PP x 2) – Low

PP = (High + Low + Close) / 3

S1 = (PP x 2) – High

S2 = PP – (High – Low) = PP – (R1 – S1)

S3 = Low – 2 x (High – PP)
আপনি এখন কষ্ট করে High, low এবং close বের করে পিভট পয়েন্ট বের করতে পারেন। অথবা পিভট পয়েন্ট ক্যালকুলেটরের মাধ্যমে High, low এবং close সহজেই ডাটাগুলো বের করে নিতে পারেন। এছাড়া কিছু পিভট ইন্ডিকেটর রয়েছে, যেগুলো আপনার চার্টেই পিভট পয়েন্ট দেখিয়ে দেবে। এজন্য ইন্ডিকেটর বিভাগটি দেখুন।

6.png

কিভাবে পিভট পয়েন্ট ব্যবহার করে ট্রেড করবেনঃ
ব্রেকআউট ট্রেডিং
ব্রেকআউট হলে আপনি যেভাবে ট্রেড করেন, এখানেও তা ঠিক সেভাবেই কাজ করবে। প্রাইস যদি পিভট লাইনকে ক্রস করে এবং সেদিকে ক্লোজ হয়, তবে সাধারনত প্রাইস সেদিকেই যেতে থাকে। নিচের চার্টটি দেখুনঃ
7.png
সবুজ জায়গাটি বোঝাচ্ছে যে প্রাইস প্রথমে পিভট পয়েন্টের নিচে ছিল এবং সবুজ জায়গা থেকে পিভট লাইন অতিক্রম করে ওপরের দিকে উঠেছে।
যখন পিভট লাইন ভেঙ্গে যায়, তার মানে হল যে প্রাইস এখন সেদিকে যেতে শুরু করবে। ব্রেকআউট ট্রেড করার উপায় হল, ব্রেক হবার পরেই সেই দিকে ট্রেড ওপেন করা। আপনি যখন ট্রেড ওপেন করবেন, তখন আপনি ব্রোকেন লাইনের ঠিক বিপরীতে স্টপ লস সেট করবেন এবং টেক প্রফিট হবে পরবর্তী লাইন।
8.png

ওপরের চার্টটি দেখুন। ট্রেড ওপেন করা হয়েছিল ২.০৫৫০ (সবুজ লাইন) প্রাইসে। স্টপ লস সেট করতে হবে ১.০৫৩৫ এ পিভট পয়েন্টের (লাল লাইন) নিচে। আপনার টেক প্রফিট হবে ১.০৫৯৪ এর R1 এর আশেপাশে।
এই ট্রেডটি মাত্র ৪০ পিপসের ছিল। খুব বেশী উত্তেজিত হবার কোন কারন নেই। কারন এগুলো সবসময় কাজ করে না। টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিসের অন্য কোন কিছুর সাথে আপনি এটাকে কাজে লাগিয়ে আপনি আরেকটু নিশ্চিত হতে পারনে যে আপনি ভুল ট্রেড করতে যাচ্ছেন না।

রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং
রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং হল যখন প্রাইস ২টি পিভট পয়েন্টের মধ্যে আঁটকে থাকে, অর্থাৎ ২টি লাইনের মধ্যেই বারবার ঘুরতে থাকে। নিচের চার্টটি দেখুনঃ
9.png

যতবার প্রাইস পিভট পয়েন্টকে হিট করে, কিন্তু ব্রেক না করে ফিরে যায়, পিভট পয়েন্ট তত শক্তিশালী হয়। যদি প্রাইস দিনে কোন পিভট পয়েন্টকে ৫ বার হিট করে, কিন্তু ব্রেক না করে, তবে বুঝতে হবে পিভট পয়েন্টটি অনেক শক্তিশালী। কিন্তু প্রাইস যদি পিভট পয়েন্টকে ১ বার হিত করে, তবে রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং ট্রেডিং করার জন্য আপনি আরও ১ বার ঐ পিভট পয়েন্ট হিট করার জন্য অপেক্ষা করতে পারেন।
আপনি যদি কোন চার্ট দেখতে থাকেন এবং দেখেন যে প্রাইস কমপক্ষে ২ বার পিভট পয়েন্টকে হিট করেছে কিন্তু ব্রেক না করে বিপরীত দিকে ফিরে গেছে, তাহলে আপনি রেঞ্জ বাউন্ড ট্রেডিং করার কথা ভাবতে পারেন।

চার্ট প্যাটার্নঃ
চার্ট প্যাটার্ন হল ভিবিন্ন ধরণের চার্ট দেখে তার ভিবিন্ন অবস্থার প্রেক্ষিতে ট্রেড করা। আরো সহজ করে বললে বলা যেতে পারে, আপনি বার, লাইন বা ক্যান্ডেলস্টিক যে চার্টই ব্যাবহার করেন না কেনো মার্কেটের ট্রেন্ড বা প্রাইস মুভমেন্ট এর উপর ভিত্তি করে মার্কেট চার্ট অনেক ধরণের আকৃতিতে (Shape) ধারন করে এবং প্রতিটি সেইপ এর একটি সম্ভব্য অর্থ থাকে। ফরেক্স মার্কেটে চার্ট এনলিস্টরা এই রকম কিছু স্ট্রেটিজি আবিস্কার করেছেন যাতে করে একজন ট্রেডার চার্টের আকৃতি বা ভিবিন্ন চার্ট ট্রান্সফরমেশন সেইপ দেখে পরবর্তী মার্কেট মুভমেন্ট বা মার্কেট ট্রেন্ড বুঝে ট্রেড করতে পারে। এই পদ্ধতিকেই চার্ট প্যাটার্ন বলা হচ্ছে।

বেসিক চার্ট প্যাটার্ন ২ ধরণের
১। কন্টিনিউশন চার্ট প্যাটার্ন
২। রিভার্সেল চার্ট প্যাটার্ন

কন্টিনিউশন চার্ট প্যাটার্নঃ যে সকল প্যাটার্নে প্রাইস এর ধারাবাহিক মুভমেন্ট থাকে অর্থাৎ বিপরীত না হয়ে একটি ধারাবাহিক পন্থা অবলম্বন করে সেই সব চার্ট প্যাটার্নকে কন্টিনিউশন চার্ট প্যাটার্ন বলা হয়। ভিবিন্ন রকমের কন্টিনিউশন চার্ট প্যাটার্ন আছে, কিছু কমন কন্টিনিউশন চার্ট প্যাটার্ন হলঃ

১) অ্যাসেন্ডিং ট্রাইএঙ্গেল (Ascending Triangle) :

এই প্রকার প্যাটার্ন সাদৃশ্য হয় যখন একটি রেসিসটেনস লেভেলে ত্রিকোণিক বিপরীত দুই বা ততোধিক Higher Lows এর মাধ্যমে একীভূত হয়, এটি টেকনিক্যাল এনালাইসিসের একটি বুলিশ চার্ট প্যাটার্ন। অ্যাসেন্ডিং ট্রাইএঙ্গেল প্যাটার্ন নির্ধারণে ট্রেন্ডলাইনে আঁকতে হয় মিনিমাম দুটি সমান হায়ার প্রাইস লেভেল এর আনভুমিক (হরাইযেন্টাল) লাইনে এবং বিপরীত দুয় বা ততোধিক লাওয়ার প্রাইস লেভেল এর মাধ্যমে যা দেখতে একটি ত্রিকোনিক সেইপ এর মত হবে। নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করুন...

1.png

কিভাবে ট্রেড করবেনঃ

অ্যাসেন্ডিং ট্রাইএঙ্গেল প্যাটার্নে ট্রেড করতে আপার হরাইজেন্টাল ট্রেন্ড লাইনের ১০ পিপস উপরে বায় অর্ডার করতে পারেন।

২) ডিসেন্ডিং ট্রাইএঙ্গেল (Descending Triangle ):

অ্যাসেন্ডিং ট্রাইএঙ্গেল এর বিপরীত অর্থাৎ একটি সাপোর্ট লেভেলে ত্রিকোণিক বিপরীত দুই বা ততোধিক Lower Highs এর মাধ্যমে একীভূত হয়। এটি একটি বেয়ারিশ চার্ট প্যাটার্ন। এই প্যাটার্ন লাইন আঁকতে হয় মিনিমাম দুটি সমান লাওয়ার প্রাইস লেভেল এর আনভুমিক (হরাইজেন্টাল) লাইনে এবং বিপরীত দুই বা ততোধিক হায়ার প্রাইস লেভেল এর মাধ্যমে যা দেখতে একটি ত্রিকোনিক সেইপ এর মত হবে।

নিচের চিত্রটি লক্ষ্য করুন...

2.png

কিভাবে ট্রেড করবেনঃ

ডিসেন্ডিং ট্রাইএঙ্গেল প্যাটার্নে ট্রেড করতে লাওয়ার হরাইজেন্টাল ট্রেন্ড লাইনের ১০ পিপস নিচে সেল অর্ডার করতে পারেন।

৩) সাইমেট্ট্রিকেল ট্রাইএঙ্গেল (Symmetrical Triangle)

এই প্যাটার্নটি দেখা যায় দুটি সমকেন্দ্রিক পয়েন্টে অর্থাৎ যেখানে সাপোর্ট লাইন Ascending( ঊর্ধ্বমুখী) এবং রেসিসটেনস লাইন Descending(নিম্নমুখী) বা হরাইজেন্টাল না হয়ে একটি ত্রিকোনিক আকৃতি ধারন করে। এই প্যাটার্নটি খুবই সহজে নির্ধারণ করা যায়। এটি বুলিশ কিংবা বেয়ারিশ যেকোন প্যাটার্ন হতে পারে। অর্থাৎ এই ধরণের প্যাটার্নে বুলিশ কিংবা বেয়ারিশ যেকোন ব্রেক আউট হতে পারে। এটি খুব কমন এবং রিলাইয়াবল একটি প্যাটার্ন।

বুলিশ সাইমেট্ট্রিকেল ট্রাইএঙ্গেল

3.png

বেয়ারিশ সাইমেট্ট্রিকেল ট্রাইএঙ্গেল

4.png

কিভাবে ট্রেড করবেনঃ

এই ধরণের প্যাটার্নে স্পট ট্রেড ঝুঁকিপূর্ণ । যেহেতু মার্কেট একটি ইন্ডিসিশন অবস্থায় আছে তাই আপনি কোন স্পট ট্রেডের অর্ডার দিতে পারবেন না। এই অবস্থায় পেন্ডিং ট্রেড এর মাধ্যমে আপনি ব্রেক আউট সুযোগটি নিতে পারেন। অর্থাৎ, আপার লাইন এর কয়েক পিপস উপরে বায় স্টপ অর্ডার দিতে পারেন এবং লওয়ার লাইন এর কয়েক পিপস নিচে সেল স্টপ অর্ডার দিতে পারেন।

৪) বুলিশ পেনান্ট প্যাটার্ন (Bullish Pennant )

এই প্রকার প্যাটার্ন আপট্রেন্ড মার্কেটে দেখা যায়। ভারটিকেলি আপ রাইজ মার্কেটে এটি প্রাইস আরো বাড়ার ইঙ্গিত প্রদান করে। এটি এর নামের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অর্থাৎ দেখতে একটি ফ্ল্যাগ(পতাকার) মতো সেইপ হবে। এটি বুলিশ মার্কেটের খুব শক্তিশালী একটি প্যাটার্ন যা একটি লম্বা সিঁড়ির (Step) পর আরেকটি লম্বা সিঁড়ির সূচনা প্রকাশ করে। ভারটিকেলি আপ রাইজ মার্কেটে এই প্যাটার্নটি সাইমেট্রিকেল প্যাটার্ন এর মত আঁকতে পারেন। যা অনেক শক্তিশালী একটি প্যাটার্ন।

নিচের ছবিটি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন...

5.png

পতাকার মত একটি লম্বা স্টেন্ডে(বায় কেন্ডেল) এর পরে মার্কেট আরো বায়ে যাওয়ার একটি স্ট্রং ট্রেন্ড।

৫) বেয়ারিশ পেনান্ট প্যাটার্ন (Bearish Pennant )

এটি একটি বেয়ারিশ কন্টিনিউশন প্যাটার্ন যা বর্তমান ডাউনট্রেন্ড মার্কেটকে আরো ডাউনে যাওয়ার ইঙ্গিত করে বা প্রাইস আরো কমবে। নামের সাথে সাদৃশ্যপূর্ণ অর্থাৎ একটি ফ্ল্যাগ(পতাকার) মতো সেইপ হয় এই প্যাটার্নটির। এটি ভারটিকেল ডাউনট্রেন্ড মার্কেটে একটি হরাইজেন্টাল পেনান্ট অর্থাৎ মার্কেটের একটি বড় ডাউনট্রেন্ড মুভমেন্টের পর আরো একটি বড় ডাউনট্রেন্ড মুভমেন্টের ইঙ্গিত প্রদানকারী এই প্যাটার্নকে বেয়ারিশ পানান্ট প্যাটার্ন বলা হয়। ভারটিকেল ডাউনট্রেন্ড মার্কেটে এই প্যাটার্নটি সাইমেট্রিকেল প্যাটার্ন এর মত আঁকতে পারেন।

নিচের ছবিটি ভালোভাবে লক্ষ্য করুন...

6.png

আরেকটি কথা বুলিশ বা বেয়ারিশ পেনান্ট প্যাটার্নগুলো এভাবে দীর্ঘ একটা ট্রেন্ড এর পরে পেনান্ট সেইপ এর উপস্থিতিতে আরো দীর্ঘ একটা ট্রেন্ডে যাওয়ার মূল বিষয় হল, মার্কেট যখন কোন একটি ট্রেন্ডে কিছুদুর গিয়ে স্টপ হয়, প্রকৃতপক্ষে এটা আসলে স্টপ নয় এটা হল বিরতি(Pause) যার কিছুক্ষণ পরেই আবার রিসিউম করে। তাই এই প্যাটার্নগুলোতে কন্টিনিউশন অর্ডার করা হয়।

কিভাবে ট্রেড করবেনঃ বুলিশ বা বেয়ারিশ যে প্যাটার্নে মার্কেটে ঢুকতে চান একটি এনালাইসিসের প্রয়োজন আছে। বুলিশ পেনান্টটে যদি মার্কেটে ঢুকতে হলে পেনান্ট ড্র লাইনের কয়েক পিপস উপরে বায় অর্ডার করবেন এবং বেয়ারিশ পেনান্টটে মার্কেটে ঢুকতে হলে পেনান্ট ড্র লাইনের কয়েক পিপস নিচে সেল অর্ডার করবেন। একটি কথা না বললেই নয় যে, ট্রেন্ড প্যাটার্ন গুলো অনেক ইফেক্টিভ কাজ দেয় তবে শর্ত হল প্যাটার্ন গুলোর বিহেবিয়ার বুঝে আগে ভালোভাবে প্র্যাকটিস করে একটি পার্সোনাল অভিজ্ঞতা নিয়ে নিবেন তারপর লাইভ মার্কেটে ব্যাবহার করবেন।

রিভার্সেল চার্ট প্যাটার্নঃ

যে সকল চার্ট প্যাটার্নে মার্কেট বিপরীত দিকে মোড় নেয় অর্থাৎ ট্রেন্ড চেঞ্জ করে সেসকল প্যাটার্নকে রিভার্সেল চার্ট প্যাটার্ন বলে। কয়েকটি কমন রিভার্সেল চার্ট প্যাটার্ন হলঃ

ডাবল টপঃ

এটি ফরেক্স মার্কেটের বহুল জনপ্রিয় একটি প্যাটার্ন যা প্রায় সময় দেখা যায়। এটি খুব কমন এবং রিলায়এবল একটি ট্রেন্ড রিভার্স প্যাটার্ন যা খুব সহজে চিহ্নিত করা যায়। এই প্রকার প্যাটার্নটি ইংরেজি M সেইপ এর সাথে তুলনা করে ট্রেন্ড নিশ্চিত করতে পারা যায়। অর্থাৎ যখন আপট্রেন্ড মার্কেটে পাইস বাউনসিং এর মাধ্যমে মুভ করে একটি রেসিসটেনস লেভেল কে আরেকটি সাপোর্ট (নেক) লেভেল এর মাধ্যমে পুল ব্যাক করে দ্বিতীয় বার ওই রেসিসটেনস লেভেল কে সমানভাবে বা মোটামুটি সমান ভাবে হিট করে তখন ডাবল টপ শেইপ তৈরি হয়।
নিচের ছবিটি দেখুন...

7.png

কিভাবে ট্রেড করবেনঃ ডাবল টপ পিক করে পাইস যখন কমে গিয়ে নেক (Neckline) লেভেলকে ক্রস করে তখন সেল অর্ডার করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন নেক লেভেলকে ক্রস না করলে কিন্তু বটম বাউন্স করে উপরে উঠে যেতে পারে।

ডাবল বটমঃ

প্যাটার্ন হল ডাবল টপ প্যাটার্ন এর বিপরীত একটি রিভার্সেল প্যাটার্ন। লম্বা বা বিস্তৃত ডাউন ট্রেন্ডে এটি সাদৃশ্য হয়। এটিকে ইংরেজি W শেইপ এর মত তুলনা করতে পারেন। যখন ডাউনট্রেন্ড মার্কেটে পাইস বাউনসিং এর মাধ্যমে মুভ করে একটি সাপোর্ট লেভেল কে আরেকটি রেসিসটেনস (নেক) লেভেল এর মাধ্যমে পুল ব্যাক করে দ্বিতীয় বার ওই সাপোর্ট লেভেল কে সমানভাবে বা মোটামুটি সমান ভাবে হিট করে তখন ডাবল বটম শেইপ তৈরি হয়।
নিচের চিত্রে দেখুন...

8.png

কিভাবে ট্রেড করবেনঃ ডাবল বটম পয়েন্ট টাচ করে পাইস যখন বেড়ে গিয়ে নেক (Neckline) লেভেলকে ক্রস করে তখন বায় অর্ডার করতে পারেন। তবে খেয়াল রাখবেন নেক লেভেলকে ক্রস না করলে বাউন্স করে আবার নিচে নেমে যেতে পারে।

ট্রিপল টপ (Triple Top)

টপ মত পার্থক্য হল তৃতীয় বারের মত রেসিসটেনস লেভেল কে পিক করলে এই শেইপ তৈরি হয়।

চিত্রে দেখুন...

9.png
একইভাবে তৃতীয় বারের মত সাপোর্ট লেভেল টাচ করে ক্রস করলে সেল অর্ডার করতে পারেন। এই সকল প্যাটার্নে ট্রেড করতে পারলে ১০০ পিপস এর বেশি প্রফিট বের করা যায়।

ট্রিপল বটম (Triple বটম):

ডাবল এবং ট্রিপল বটম প্যাটার্ন বুঝতে পারলে এই প্যাটার্নে আর বিস্তারিত কিছু বলার নাই আশা করি এতক্ষণে আপনি বুঝে গিয়েছেন। ডাবল বটম প্যাটার্নের আর একটু বিস্তৃত অর্থাৎ পরপর তিনটি সমান বা কাছাকাছি সাপোর্ট লেভেল টাচ করে যখন রেসিসটেনস (Neckline) লেভেল ক্রস করবে তখন এই প্যাটার্নে বায় অর্ডার করে বিশাল একটা প্রফিট নিতে পারেন।

10.png

হেড অ্যান্ড শোল্ডার টপ (Top Head & Shoulder):

এটি একটি আপট্রেন্ড রিভার্সেল প্যাটার্ন। এই প্যাটার্ন নামটি ভালোভাবে পড়লে এর ধরন সম্পর্কে ৫০% বেশি ধারণা চলে আসবে। কথা না বাড়িয়ে মূল পয়েন্টে যাই। এই প্যাটার্নটি

২টি শোল্ডার(shoulder), - Second high peak

১টি হেড(Head) - First high peak

নেক লাইন(Support) – Third high balance peak. ধারা গঠিত।

11.png

অর্থাৎ আপট্রেন্ড মার্কেটে যখন একটি সরবচ্চ হাই পিক এর মাধ্যমে দুপাশে দুটি মিডিয়াম হাই পিক এর সর্বনিম্ন পয়েন্টে (সাপোর্ট) নেক লাইন তৈরি করে তখন এই আকৃতিকে হেড অ্যান্ড শোল্ডার প্যাটার্ন বলে। হিউম্যান বডির সাথে চিন্তা করে আরো সহজ করে নিতে পারেন অর্থাৎ মাথা হচ্ছে হাই পিক এবং দুটি কাঁধ হল মিডিয়াম বা সেকেন্ড হাই পিক এবং দুই কাঁধের সর্বনিম্ন পয়েন্ট হল নেক লাইন(সাপোর্ট)। আশা করছি প্যাটার্নটি আয়ত্ত করতে পেরেছেন। চার্ট প্যাটার্নের এই প্যাটার্নটিকে অনেক নির্ভরযোগ্য একটি প্যাটার্ন হিসেবে ট্রেডাররা ট্রেড করে থাকে কারন এই প্যাটার্নটির Accuracy অনেক ভালো।
কিভাবে ট্রেড করবেনঃ অন্য সব প্যাটার্নের মত নেক লাইন ব্রেক করলে শর্ট অর্ডার অর্থাৎ টপ রিভার্সেল অর্ডার করবেন।

হেড অ্যান্ড শোল্ডার বটম রিভার্সেল (Bottom Head & Shoulder):

হেড অ্যান্ড শোল্ডার এর ঠিক বিপরীত এটি একটি বটম রিভার্সেল প্যাটার্ন। ডাউনট্রেন্ড মার্কেটে একটি হায়েস্ট লাওয়ার (Head) এর দুপাশে দুটি সেকেন্ড হায়েস্ট লাওয়ার (Shoulders) এর সরবচ্চ পয়েন্টে রেসিসটেনস বা নেক লাইন তৈরি করে তখন থাকে বটম হেড অ্যান্ড শোল্ডার বলে।

চিত্রে খেয়াল করুন...
12.png
কিভাবে ট্রেড করবেনঃ নেক লাইন ব্রেক করলে লং অর্ডার অর্থাৎ বটম রিভার্সেল অর্ডার করবেন।
  • Blogger Comments
  • Facebook Comments
Item Reviewed: টেকনিক্যাল অ্যানালাইসিস Rating: 5 Reviewed By: Airdrop Factory
Scroll to Top