728x90 AdSpace

ফরেক্স ট্রেডিং এ ব্যালেন্স, ইকুইটি, মার্জিন, ফ্রি মার্জিন, মার্জিন লেভেল

ব্যালেন্সঃ
ফরেক্স ট্রেডিং এ ব্যালেন্স বলতে আমরা বুঝি যত ডলার ব্যাবসার জন্য বিনিয়োগ করা হয়েছে এবং তার পরে ট্রেড ক্লোজ করে যত লাভ বা লোকসান করা হয়েছে তার যোগ বা বিয়োগ ফল। যেমন আপনি ১০০০ ডলার বিনিয়োগ করেছেন এবং পরে ট্রেড ক্লোজ করে আরও ১০০ ডলার লাভ করেছেন, অতএব আপনার ব্যালেন্স হবে (১০০০+১০০)=১১০০ ডলার।

আবার রহিম ১০০০ ডলার বিনিয়োগ করেছে এবং ট্রেড করে ১০০ ডলার লস করেছে অতএব রহিমের বর্তমান ব্যালেন্স হবে ৯০০ ডলার। এ ক্ষেত্রে উল্লেখ্য যে,ট্রেড এখনও ক্লোজ করা হয় নি তাতে লাভ বা লোকসান যাই থাকুক না কেন তার সাথে বালেন্সের কোন সম্পর্ক নেই। যেমন মাইকেল ১০০০ ডলার বিনিয়োগ করে ট্রেড ক্লোজ করে ১০০ ডলার লোকসান করেছে এবং এখনও ট্রেড ক্লোজ করেনি এমন ট্রেডে ৫০০ ডলার লাভ আছে, এই ক্ষেত্রে ট্রেড ক্লোজ করে ১০০ ডলার লোকসান করেছে এইটাই হিসাবে যুক্ত হবে,কিন্তু ট্রেড ক্লোজ করেনি তাতে ৫০০ ডলার লাভ দেখালেও ব্যালেন্স যোগ হবে না।তাতে ফলাফল দেখাবে ব্যালেন্স ৯০০ ডলার। যখন ৫০০ ডলারের লাভের ট্রেডটি ক্লোজ করা হবে তখনি সেটা বালেন্সের সাথে যুক্ত হবে।

উইন্ডোজের নিচে টার্মিনালের বামে ব্যালেন্স লেখা থাকে,সেখান থেকে ব্যালেন্সের পরিমাণ জানা যায়। টার্মিনাল পাওয়া যায় ভিউ মেনু  > টার্মিনাল অথবা কন্ট্রোল+টি চেপে।




ইকুইটিঃ
ব্যালেন্সের সাথে বর্তমান চলমান ট্রেডিং এর ফলাফল অর্থাৎ লাভ বা লোকসান যা আছে তার সমন্বিত ফলকে ইকুইটি বলা হয়। যথা একটি একাউন্টে ব্যালেন্স আছে ১০০০ ডলার এবং যে ট্রেড দেওয়া আছে তার সমষ্টিগত যোগফল   -১০০,অর্থাৎ এই অবস্থাই সকল ট্রেড ক্লোজ করলে ১০০ ডলার লোকসান হয়,এ অবস্থাই ইকুইটি দেখাবে ৯০০ দলার।আবার জসিমের একটি একাউন্টে ব্যালেন্স আছে ১৪০০ ডলার এবং তার যতগুলি ট্রেড আছে তার সমষ্টি গত যোগফল ২০০ ডলার।

অতএব ইকুইটি হবে ১৬০০ ডলার। একাউন্ট টিকিয়ে রাখতে ইকুইটি একটি বড় ভুমিকা পালন করে।তাই ব্যালেন্স থেকেও ইকুইটির দিকে বেশী গুরুত্ব দিতে হবে। উদাহরণ হিসাবে ধরে নিই,আপনার একাউন্ট ব্যালেন্স আছে ১০০০ ডলার কিন্তু ইকুইটি আছে ১০০ ডলার, অতএব আমি ধরে নেব বর্তমানে আপনার একাউন্টের ফলাফল ১০০ ডলার আপনার আছে।কিন্তু আপনার বন্ধুর একাউন্টে ব্যালেন্স আছে ৫০০ ডলার এবং তার ইকুইটি আছে ৬০০ ডলার। সেই ক্ষেত্রে আপনার একাউন্ট থেকে আপনার বন্ধুর একাউন্টের অবস্থা ভাল বলে বিবেচিত হবে। কারণ, ব্যালেন্স বেশী থাকার থেকে ইকুইটি বেশী থাকাই বেশী জরুরী এবং বেশী কাম্য।




মার্জিনঃ
বর্তমানে যতগুলি ট্রেড দেওয়া আছে তার জন্য যত ডলার বিনিয়োগ করা হয়েছে তার পরিমাণই হল মার্জিন। এখানে একটু বিশদ আলচোনার প্রয়োজন- ধরি, পলাশ EUR/USD তে একটি বাই ট্রেড দিল।এর অর্থ দাড়ায়-পলাশ ইউরো বাই করল ইউএসডি ডলারের বিনিময়ে।অর্থাৎ,ইউরো বাই করলো এবং ইউ.এস.ডি সেল করলো।যে ট্রেড করা হয় তা প্রথমটির (বেস কারেন্সি) ক্ষেত্রে প্রযোজ্য হয় এবং পরের কারেন্সি (কোট কারেন্সি) ক্ষেত্রে তার উল্টো হবে। প্রথমটি বাই অর্থ দ্বিতীয়টি সেল, তদ্রুপ প্রথমটি সেল অর্থ দ্বিতীয়টি বাই। EUR/USD = ১.৩৮৪১ এর অর্থ দাড়ায় ১ ইউরো-র বিনিময়ে ইউনাইটেড স্টেট ডলার প্রয়োজন হয় ১.৩৮৪১।

আমরা যখন ১ ভলিউম দিয়ে ট্রেড দেয়, এই ভলিউম বিষয়টি কী?
আমরা শেয়ার বাজারে যেমন শেয়ার কেনার সময় লট হিসেব করি, অর্থাৎ কতটি শেয়ার একটি লট তার হিসেব করি। ভলিউম বলতে এক লটে কতটি মুদ্রা ক্রয় বা বিক্রয় হবে তার পরিমাণকে বুঝায়। এক ভলিউম অর্থ ১,০০,০০০ (এক লক্ষ)ইউনিট। কিন্তু এখানে লক্ষণীয় যে, ইউরো/ইউ.এস.ডি তে ১.৩৮৪১ মূল্যে ১ ভলিউম ট্রেড দিলে ডলারের প্রয়োজন হয় = ১.৩৮৪১* ১০০০০০ = ১৩৮৪১০ ডলার। কিন্তু আমাদের একাউন্টে এত ডলার না থাকলেও ১ ভলিউম ট্ট্রেড দিতে পারি কেন?

আমরা যখন একাউন্ট খুলি তখন লেভারেজ বলে একটি বিষয় নির্বাচন করতে হয়। লেভারেজ = ১:১০০, ১: ৫০০, ১:১০০০ ইত্যাদির যে কোন একটি লেভারেজ নির্বাচন করতে হয়। এর অর্থ একাউন্ট হোল্ডার ১ ডলারের ট্রেড দিলে তার সাথে ব্রোকার প্রতিষ্ঠান উক্ত ১০০ গুন/ ৫০০গুন/ ১০০০গুন ডলার বিনিয়োগ করবে। অর্থাৎ আপনার লেভারেজ যদি ১:১০০০ হয় তবে আপনি যত ডলারের ট্রেড করবেন তার ১০০০ গুন ডলার ব্রোকার কোম্পানি লোন হিসেবে আপনাকে দিবে। তাই ১.৩৮৪১ মূল্যে ১ ভলিউম ট্রেড দিলে আপনার নিজস্ব ডলার লাগবে (১.৩৮৪১*১০০০০০)/১০০০= ১৩৮ ডলার।




ফ্রি মার্জিনঃ
ইকুইটি থেকে মার্জিন বাদ দিলে যে পরিমাণ থাকে তাকে ফ্রি মার্জিন বলে। ফ্রি মার্জিন অর্থ হল আপনি আর কত ডলার বিনিয়োগ করতে পারবেন।




মার্জিন লেভেলঃ
ইকুইটিকে মার্জিন দ্বারা ভাগ করে ১০০ দ্বারা গুন করলে মার্জিন লেভেল পাওয়া যায়।  মার্জিন লেভেল ৩৫% এর কম হলে একাউন্ট স্বাভাবিক ভাবেই বন্ধ হয়ে যায়। তাই মার্জিন লেভেল সর্বদা গুরুত্তের সাথে বাড়িয়ে রাখা দরকার। এখানে লক্ষণীয় যে, মার্জিন লেভেল বাড়াতে হলে ইকুইটি বাড়াতে হবে অথবা মার্জিন কমাতে হবে।




Balance = Total investment+ Realized Profit or Loss (What had taken). (i)
Equity= Balance+ Unrealized Profit or Loss of current all Trades. (ii)
Margin = Investment of Present Trades, (iii)
Free Margin= Equity – Margin (iv)
Margin level= Equity/Margin* 100 (v)

Margin level  <35% (ব্রোকার ভেদে আলাদা হতে পারে)  হলে ইকুইটি কমে শূন্য বা তার কাছাকাছি হয়ে যায়, তখন ট্রেড বন্ধ হয়ে যায়।

উপরোক্ত ৫ নং সুত্র থেকে পাই, মার্জিন লেভেল=ইকুইটি ভাগ মার্জিন। অর্থাৎ ইকুইটি বাড়লে, মার্জিন- লেভেল ইকুইটি বৃদ্ধির আনুপাতিক হারে বাড়ে এবং মার্জিন বাড়লে মার্জিন- লেভেল মার্জিন লেভেল মার্জিন লেভেল বৃদ্ধির বিপরীত অনুপাতে কমে। এতে বুঝা যায় যে,

(ক) ইকুইটি কমে গেলে মার্জিন লেভেল কমে যায় এবং
(খ) মার্জিন বেড়ে গেলে (অর্থাৎ ট্রেড এর পরিমাণ বেড়ে গেলে) মার্জিন লেভেল কমে যায়।

এর থেকে আমরা সিদ্ধান্ত নিতে পারি যে, একাউন্ট টিকিয়ে রাখতে বা মার্জিন লেভেল ঠিক রাখতে,

১। ইকুইটি বাড়ানোর চেষ্টা করতে হবে এবং
২। মার্জিন বাড়ানো যাবে না, অর্থাৎ একসাথে ট্রেড এর সংখ্যা ও ভলিউম বাড়ানো যাবে না।

বিঃদ্রঃ ফরেক্স ট্রেড এ লাভ করার একমাত্র উপায় হল মানি ম্যানেজমেন্ট। মানি ম্যানেজমেন্ট ঠিকমতো করতে পারলে ফরেক্স ট্রেড এ লোকসান করাটা কঠিন এবং লাভ করাটা সহজ।
  • Blogger Comments
  • Facebook Comments
Item Reviewed: ফরেক্স ট্রেডিং এ ব্যালেন্স, ইকুইটি, মার্জিন, ফ্রি মার্জিন, মার্জিন লেভেল Rating: 5 Reviewed By: Airdrop Factory
Scroll to Top